আপনার ফুসফুস-এর দেখাশোনার দায়িত্ব নেবে এই কাঁচা টমেটো | টমেটোর উপকারিতা | স্বাস্থ্য টিপস | Health Tips Bangla | BD Canvas
প্রতিদিন দুটো করে কাঁচা টমেটো খেলে বায়ু দূষণ যতই বাড়ুক
না কেন ফুসফুসের স্বাস্থ্য নিয়ে কোনও চিন্তাই করতে হবেনা। কারণ ফুসফুস-এর দেখাশোনার
দায়িত্ব নেবে এই রক্তিম সবজিটি। কিন্তু টমেটো কিভাবে ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়াবে? আজ
আপনাদের সাথে সেই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো - বিস্তারিত জানতে ভিডিওটি সম্পূর্ণ
দেখুন -
ব্লমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেল্থের গবেষকদের করা একটি স্টাডিতে
দেখা গেছে টমেটোর ভেতরে এমন অনেক শক্তিশালী উপাদান রয়েছে, যা ধূমপান এবং বায়ু দূষণের
কোনও প্রভাব যাতে ফুসফুসের উপর না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখে।
সেই সঙ্গে ফুসফুসের কর্মক্ষমতাও মারাত্মক বৃদ্ধি করে। প্রসঙ্গত,
জার্মানি, ইংল্যান্ড এবং নরওয়ের প্রায় ৬৮০ জন বাসিন্দার উপর প্রায় ১০ বছর ধরে এই গবেষণাটি
চালানোর পর টমেটোর এইসব গুণাগুণ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। এই পরীক্ষাটি
চলাকালীন, গবেষকরা লক্ষ করেছিলেন যে নিয়মিত টমেটো খাওয়ার অভ্যাস করলে একদিকে যেমন
ফুসফুসের ফাংশনের উন্নতি ঘটে, তেমনি ভঙ্গুর শরীরও বল ফিরে পায়। সেই সঙ্গে আরও সব শারীরিক
উপকারিতা মিলতে শুরু করে।
রান্নায় এই সবজিটির ব্যবহার বাঙালিরা প্রায়শই করেই থাকেন।
কিন্তু কাঁচা টমাটো খাওয়ার অভ্যাস সচরাচর খুব একটা চোখে পড়েনা। একথা বলতে দ্বিধা
নেই যে রান্নার পরিবর্তে যদি কাঁচা অবস্থায় নিয়মিত ২-৩ টা করে টমাটো খাওয়া যায় তাহলে
দারুন উপকার মেলে। এক্ষেত্রে শরীরের যে যে উপাকার হয়... তা হলো –
ভিটামিন এবং মিনারেলের ঘাটতি দূর করে:
নিয়মিত যদি একটা করেও টমেটো খেতে পারেন তাহলে দেহের অন্দরে
দিনের চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ ভিটামিন সি-এর ঘাটতি দূর হয়। সেই সঙ্গে ভিটামিন এ, পটাশিয়াম
এবং আয়রনের চাহিদাও পূরণ হয়। এবার ভাবুন তো যদি একটার জয়গায় দুটো করে টমাটো খেতে
পারেন, তাহলে কতটাই না উপকার মেলে। প্রসঙ্গত, নার্ভের কর্মক্ষমতা বাড়াতে পটাশিয়াম
বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। অন্যদিকে আয়রন, রক্তাল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।
হাড় শক্তপোক্ত হয়:
ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন-কে সমৃদ্ধি হওয়ার কারণে হাড়ের
স্বাস্থ্যের উন্নতিতে টমাটোর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো বুড়ো বয়সে অস্টিওপোরোসিসের
মতো রোগের হাত থেকে বাঁচতে এখন থেকেই টমাটো খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন।
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়:
টমাটোয় উপস্থিত লাইকোপেন নামক একটি উপাদান ত্বকের সৌন্দর্য
বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে আরেকভাবেও এই সবজিটিকে কাজে লাগাতে
পারেন। ১০-১২ টা টমাটো নিয়ে ভেতরটা পরিষ্কার করে নিন। তারপর টমনাটোর স্কিনটা ভালো
করে সারা মুখে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পরে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে
নিন। সপ্তাহে কয়েকবার এমনভাবে ত্বকের পরিচর্যা করলে দেখবেন বলিরেখা কমতে শুর করবে।
সেই সঙ্গে স্কিনের ঔজ্জ্বল্যও বৃদ্ধি পাবে।
চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়:
চুলের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতে ভিটামিন-এ-এর কোনও বিকল্প নেয়।
আর এই উপাদানটি প্রচুর মাত্রায় রয়েছে কাঁচা টমেটোতে। তাই দীর্ঘদিন যদি চুলকে সুন্দর
রাখতে চান, তাহলে এখন থেকেই কাঁচা টমেটো খাওয়ার অভ্ভাস করুন।
দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়:
প্রসঙ্গত, দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতেও ভিটামিন-এ বিশেষ ভূমিকা
পালন করে থাকে।টমেটোতে উপস্থিত ভিটামিন এ, ম্যাকুলার ও ডিজেনারেশনের আশঙ্কা কমায়ই,
সেই সঙ্গে রাত-কানার মতো রোগ দূর করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই বয়স বাড়ার
সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি যাতে কমে না যায়, বা দৃষ্টিশক্তির উন্নতির জন্য নিয়মিত টমেটো
খান। ভালো ফল পাবেন।
ক্যান্সার বিরোধী:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে টমাটোয় উপস্থিত লাইকোপেন প্রস্টেট,
কলোরেকটাল এবং স্টমাক ক্যান্সার রোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে লাইকোপেন
হল একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা কোষের বিভাজন ঠিক মতো হতে সাহায্য করে।
ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা কমে। আর যদি একবার ক্যান্সার
কোষ জন্ম নিয়েও নেয়, তাহলেও যাতে তার বৃদ্ধি দ্রুত গতিতে না হয়, সেদিকে টমাটো খেয়াল
রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই মারণ রোগ শরীরকে ক্ষয় করার সুযোগ পায় না।
ধূমপানের কুপ্রভাব থেকে বাঁচায়:
টমাটোয় রয়েছে কিউমেরিক এবং ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড, যা
কার্সিনোজের প্রভাব থেকে শরীরকে রক্ষা করে। ফলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা
হ্রাস পায়। তাই যারা একান্তই ধূমপান ছাড়তে পারছেন না, তারা দয়া করে দিনে ২-৩ টে কাঁচা
টমাটো খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন।
এ ছাড়াও একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে বীজ সমেত টমাটো খেলে
কিডনিতে স্টোন হওয়ার আশঙ্কা একেবারে শূন্যে এসে দাঁড়ায়।
0 comments:
Post a Comment