হ্যালো বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন, আশাকরি
ভালো আছেন, আজ আমি হাজির হয়েছি আরো একটি নতুন ভিডিও নিয়ে। বন্ধুরা আজকের ভিডিওতে আমি
আপনাদের বলবো, পুরুষদের ধ্বজভঙ্গ, শুক্রতারল্য, বা স্ত্রীলোক দর্শনেই শুক্রক্ষরন হয়
এবং মহিলাদের সন্তান প্রসব অথবা অন্য কোন কারণে যোনী প্রসারিত হয়ে গেলে তা নিরাময়
করার সহজ ও প্রাকৃতিক উপায়, সেই সাথে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে আলকুশি গাছের বিভিন্ন উপকারীতা
ও এর ব্যাবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো । তাই ভিডিওটি না টেনে শুরু থেকে শেষ
পর্যন্ত দেখুন আশাকরি উপকৃত হবেন। তো চলুন সবার আগে এই গাছ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক
–
আলকুশী একটি বর্ষজীবী লতানো গাছ।
ইংরেজি নাম ভেলভেট বিন। এটি স্থানভেদে বিভিন্ন নামে পরিচিতি। যেমন- আত্মগুপ্তা, স্বয়ংগুপ্তা,
মহর্ষভী, কুণ্ডলী, দুঃস্পর্শা, রোমালু, শীম্বী ইত্যাদি। একে দেখতে অনেকটাই শিমগাছের
মতই দেখায় । এর বৃত্যংশ পাঁচটি, এতে বিষাক্ত রোম আছে । আলকুশীর যে অংশ ব্যবহার করা
হয় তা হলো এর বীজ ও শিকড় । প্রাচীনকাল থেকেই এটি ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত। ভারতীয়
বনৌষধি গ্রন্থেও এ গাছের অসংখ্য কার্যকর ব্যবহারের কথা উল্লেখ রয়েছে। তো কথা না বাড়িয়ে
চলুন জেনে নেয়া যাক বিভিন্ন রোগে এই গাছের
ব্যবহার সম্পর্কে -
ধ্বজভঙ্গ রোগে আলকুশী
ধ্বজভঙ্গ পুরুষের জন্য একটি , কঠিন
ও জটিল রোগ। ধ্বজভঙ্গের লক্ষনে যা যা পাওয়া যায় তা হলো :- ইন্দ্রিয় শৈথিল্য, পুরুষত্বহীন,
স্ত্রী গমনে অক্ষমতা, শরীরের দুর্বলতা হয়। দুই মাসেরও অধিক সময় যাবৎ যৌন ক্রিয়ার
প্রতি কোন আগ্রহ অনুভব না করা। এক্ষেত্রে এই আলকুশী বীজকে রাতে জলে ভিজিয়ে রেখে, সকালে
খোসা ছাড়িয়ে, ঐ ছাড়ানো বীজগুলোকে সমান পরিমাণ দুধে-জলে মিশিয়ে সিদ্ধ করে, ঐ বীজ
শিলে পিষে, তাকে ঘিয়ে ভেজে, চিনি মিশিয়ে হালুয়ার মতো করে রাখতে হবে, এবং তা নিয়ম
অনুসারে খেতে হবে। ঔষধার্থে মাত্রা হলো ৫ গ্রাম করে সকালে ও বিকালে দু’বেলা খাওয়া, আর এইটি খাওয়ার পর একটু দুধ ১ কাপ পরিমাণ খাওয়া
দরকার। এক সপ্তাহ পর থেকে কিছুটা উন্নতি হচ্ছে বুঝতে পারবেন। আর নিয়মিত সেবনে অল্প
কিছুদিনের মধ্যেই এটি সম্পূর্ণ রূপে নিরাময় হয়ে যাবে।
মাংসপেশীগত বাতে
এই রোগ সাধারণত শিশু বা বালকদের বেশি
দেখা যায়। এদের চেহারা হবে থসাথসে, এরা ছুটতে পারে না, দেহের ভারসাম্য রেখে চলার ক্ষমতা
কম; পায়ে হলে হাঁটু ভেঙ্গে পড়ে যেতে দেখা যায়। আর পেশীগুলি ঢিলঢিল করে, বর্তমান
পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা যাকে বলে থাকেন এট্রোপি অফ দি মাসল; এদের ক্ষেত্রে আলকুশী
বীজের গুঁড়ো আধা গ্রাম করে গরম দুধে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা ঐ পেশীগত বাত নিরাময়
হবে। এদের ক্ষেত্রে নিষেধ হলো যে কোনো মিষ্টি জাতীয় খাবার; এদের পক্ষে তিক্ত রসের খাদ্যই
বেশি উপকারী আর কোনো প্রকার মালিশ বা সেক দেওয়ার দরকার নেই, এই প্রক্রিয়াতেই উপকার
হবে।
রক্তপিত্ত
রক্তপিত্ত অর্থাৎ কাশির সঙ্গে বা
নাক দিয়ে হঠাৎ ই রক্তপাত হওয়া। এরকম হলে ২০ গ্রাম আন্দাজ আলকুশীর বীজ অগের দিন রাতে
ভিজিয়ে রেখে পরদিন তার খোসা ছাড়িয়ে, একটু থেঁতো করে ৫ থেকে ৬ কাপ জলে সিদ্ধ করে
আনুমানিক ৩ কাপ পরিমান থাকতে নামিয়ে রেখে দিতে হবে। এর পর জলটা
থিতিয়ে গেলে, উপর থেকে জলটা ঢেলে নিয়ে সমস্ত দিনে ৩ থেকে ৪ বার খেলে ২ থেকে ৪ দিনের
মধ্যে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যাবে। আরও ভাল হয় যদি এর সঙ্গে আলকুশী গাছের কচি পাতা শাকের
মতো রান্না করে খাওয়া যায়।
বাতব্যথা
এক প্রকার বাতব্যাধি আছে যাতে হাত
উপরে উঠানো যায় না । হাত কিছুটা কোনো রকমে উঠলো বটে, কিন্তু বহু কষ্টে; এই সমস্যা
ডান বা বাঁ যে কোনো হাতেই হতে পারে। এটা প্রৌঢ়কালেই বেশি হতে দেখা যায়। সাধারণত ৩০
থেকে ৩৫ বছর বয়সের নীচে এ রোগটা তেমন হাতে হয় না। এক্ষেত্রে আলকুশী গাছের মূল জল দিয়ে
বেঁটে, আনুমানিক এক চা চামচ রস করে, পর পর কয়েকদিন খেলে ব্যথা কমতে থাকে; এবং বেশ
কিছুদিন খেলেই এই রোগ সেরে যায়।
এ ছাড়াও সন্তান প্রসব অথবা অন্য কোন
কারণে স্ত্রীলোকের যোনী প্রসারিত হয়ে গেলে পরিমান মতো আলকুশির শিকড়ের রসে একখণ্ড
পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে তা যোনীতে ধারন করলে যোনী সঙ্কীর্ণ অর্থাৎ স্বাভাবিক হয়ে যাই।
আলকুশি ব্যবহারে সতর্কতা
আলকুশীর ফলের উপরের আস্তরণ বা শুয়া
অত্যন্ত বিষাক্ত । এটি ত্বকে লাগলে ত্বকে অত্যন্ত জ্বালাযন্ত্রণা ও চুলকানি আরম্ভ হয়।
কাজেই বীজ সংগ্রহ কালে খুব সাবধান ও যত্নবান হওয়া আপরিহার্য । আলকুশির গাছ আমাদের
জন্য অত্যন্ত উপকারী যার ঔষধি গুণাগুণ অনেক । তাই আমাদের সকলেরই উচিত নিয়মিত আলকুশী
সেবন করা এবং এর যথার্থ ব্যবহার করা।
0 comments:
Post a Comment